অচিনবৃক্ষের চটবাড়ি
কোথাও ঘুড়ে আসার কথা বলছিলো সবাই। ঢাকা কলেজের রক্তদানের সেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘মানুষ’ এর বন্ধুরা সবাই মিলেই। অবশেষে ক্যালেন্ডারের পাতায় ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৫ চলে এলো। সকাল ৯ টার দিকে বন্ধুরা এসে হাজির। ঢাকা কলেজের সামনে লোকাল পরিবহন প্রজাপতি চলে এলো। বাসা পৌছলো ঘড়ির কাটায় তখন ১০টা বেজে ৪৫ মিনিট।
প্রথমে মিরপুর চটবাড়ি। শতবর্ষের অচিন বটগাছটি ঘুরে দেখার লোভ সামলাতে পারেনি কেউ। যখন বটগাছটির ছায়ায় বসে জম্পেশ আড্ডা হচ্ছিলো ঠিক তখনই দেখা হলো মুক্তিযোদ্ধা আহাদ আলীর সঙ্গে। বলছিলো একাত্তরের চেনাজানা অনেক স্মৃতি জড়িয়ে থাকা এই বটগাছের গল্প। নিজের একটুকরো স্মৃতির কথাই বলছিলেন তিনি। পাকিস্তানি হানাদারের আক্রমণে একদিন এই বটগাছের নিচে লুকিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তখন সাথে ছিলো আমার সাত ও পাঁচ বছরের আমেনা ও রহিমা দুইবোন। এর পাশেই বয়ে চলা তুরাগের শাখা বেরুলিয়া নদী।
দুপুরের খাবার সেড়ে বিশ্রাম। যে যার মতো দুষ্টুমি, হাসি- গল্পে মেতে সময় পার। আকাশে সূর্যের ছায়াটাও হেলে পড়েছে মাথার ওপর। তাই আর বসে থাকার সুযোগ নেই। নৌকায় চড়ে ঘুরে দেখা বেরুলিয়া নদী। নদীর মাঝে ভাসমান রেস্তোরা। নৌকো করেই সেখানে যেতে হয়। আর ছিলো নদীর মাঝখানে বেরুলিয়া নামে ছোট্ট একটি গ্রাম। এই গ্রামে হিন্দুপাড়ায় শতবছরের পুরোনা মন্দিরের অবস্থান। মন্দিরের গায়ে পুরনো দেব দেবীর কারুকাজ ছিলো চোখে পড়ার মতো। বর্ষা মৌসুমে জেলো মাছ ধরে জীবিকা উপার্জন করে। আরও ছিলো জেলেদের বৈচিত্রময় জীবন।
এবার ফেরার পথে। সূর্য প্রায় ডুবুডুবু। তাই আর কোনোদিকে সময় না পাড় করে সবাই চলে এলাম বাসে। বাস মিরপুর হয়ে ঘন্টখানেকের মধ্যেই প্রিয় ক্যাম্পাস ঢাকা কলেজের সামনে এসে থামলো। তারপর যে যা গন্তব্যে।
বিডিটাইমস৩৬৫ডটকম/ জামিল