আপডেট : ৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ১২:২৩

নাইকো দূর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন খালেদা

অনলাইন ডেস্ক
নাইকো দূর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন খালেদা
ফাইল ফটো

নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে আগামী ২৮ ডিসেম্বর এ মামলার অভিযোগ (চার্জ) গঠনের শুনানির দিন ধার্য করে ওইদিন খালেদাকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন।

সোমবার (৩০ নভেম্বর) হাইকোর্টের আদেশে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান মামলাটির প্রধান আসামি খালেদা। শুনানি শেষে তার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার বিশেষ জজ-৯ আমিনুল ইসলামের আদালত।

বেলা বারটা ২৫ মিনিট থেকে ৩৫ মিনিট পর্যন্ত আদালতে শুনানি হয়।

খালেদার জামিনের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন খালেদার প্রধান আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তাকে সহায়তা করন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবদিন মেজবাহ, অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলমসহ বিএনপির আইনজীবী নেতারা।

দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল।

বেলা সোয়া ১২টার দিকে আদালতের এজলাসকক্ষে আসেন খালেদা।

এরআগে বেলা ১১টায় গুলশানের বাসা ‘ফিরাজা’ থেকে তার গাড়ি পুরান ঢাকার আদালত পাড়ার দিকে রওনা হয়। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানও একই গাড়িতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যান।

সাত বছর আগে দায়ের করা দুর্নীতি মামলাটি বর্তমানে অভিযোগ গঠন পর্যায়ে রয়েছে।

এদিকে খালেদার আত্মসমর্পণকে ঘিরে পুরান ঢাকার আদালত পাড়ার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সকাল থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ও আশেপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে দেড় শতাধিক পুলিশ ও র‌্যাব। আদালত ফটকে বসানো হয়েছে আর্চওয়ে।

আশপাশের সড়কগুলোতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আদালতের ভেতরে ও আশপাশের এলাকায় আদালতের কর্মচারী ও জনসাধারণকে প্রয়োজনে তল্লাশি করা হচ্ছে।

মামলা আদ্যপান্ত

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। পরের বছর ৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

এতে অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।

মামলা হওয়ার পর খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই দুর্নীতির এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাই কোর্ট, সেই সঙ্গে দেওয়া হয় রুল।

মামলা দায়ের কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। ২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলায় জামিন পান খালেদা।

প্রায় সাত বছর পর চলতি বছর শুরুতে রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয় দুদক। খালেদার আবেদনে রুলের ওপর শুনানি করে গত ১৮ জুন রায় দেয় হাই কোর্ট।

খালেদার করা আবেদন  খারিজ করে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হয় ওই রায়ে। সেই সঙ্গে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আসামি কারা?

খালেদা জিয়া ছাড়া এ মামলার বাকি আসামিরা হলেন- চার দলীয় জোট সরকারের আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম) এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

বিডিনিউজ৩৬৫ডটকম/একে/জেডএম

উপরে