আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৬:২৭

শেখ হাসিনার জন্যই উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
শেখ হাসিনার জন্যই উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ বাংলাদেশ

ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ, করোনা মহামারি বৈশ্বিক মন্দা, দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র, সব কিছু নিয়ে কঠিন সময় পাড় করছে আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু তার মধ্যেও দেশের অগ্রগতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার যোগ্য নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার করোনা অতিমারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বৈশ্বিক নেতিবাচক পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশকে ইতিবাচক পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্ব বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরনে সহায়ক হয়েছে। গত দেড় দশকে বাংলাদেশের আর্থিক উন্নতি আজ পশ্চিমাদের কাছেও শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে উঠেছে। শুধু আর্থিক উন্নয়নই নয়, বিভিন্ন সামাজিক সূচকেও বাংলাদেশ আজ টেক্কা দিচ্ছে প্রতিবেশীদের।  খাদ্যে সয়ম্ভর দেশে অনেকটাই বেড়েছে মাথাপিছু জাতীয় আয়। দেশীয় পণ্য উতপাদনের হার প্রতিবেশী ভারতের থেকেও আমাদের বেশি।

উন্নয়নশীল দেশের তকমা পেতে গেলে, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের (ইকোসক) মানদন্ড অনুযায়ী দেশের মাথাপিছু আয় হতে হবে বছরে কমপক্ষে ১ হাজার ২৩০ মার্কিন ডলার।  বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ ইকোসকের মানদন্ড থেকেও আমরা অনেকটাই এগিয়ে। শুধু মাথাপিছু জাতীয় আয়েই নয়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মানবসম্পদ সূচকেও এগিয়ে থেকেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আদায় করেছে।  মানবসম্পদ সূচকে প্রয়োজন ছিল ৬৬, কিন্তু আমাদের অর্জন হচ্ছে ৭২ দশমিক ৯। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকেও আমাদের অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই। জাতিসংঘের শর্ত অনুযায়ী অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার মাণদণ্ড হচ্ছে ৩২ ভাগ বা তার কম। আমরা সেখানে রয়েছি ২৪ দশমিক ৮ ভাগে। ফলে সবদিক থেকেই আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে যোগ্য দেশ হিসাবেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আদায় করেছি।

তবে আগের দুটি মেয়াদ অনেকটাই নির্বিঘ্নে চালাতে পারলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান মেয়াদ কিন্তু খুবই চ্যালেঞ্জিং।  চলতি মেয়াদে করোনা মোকাবেলার পাশাপাশি যুদ্ধ আর বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে দেশে-বিদেশে ষড়য্ন্ত্রও। জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা তিনি। তাই সমস্ত প্রতিকূলতাকে পরাস্ত করে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করেছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল, সোনা বাংলা গড়ে তোলা। তার সেই স্বপ্নকেই স্বার্থক করে তুলতে চায় আওয়ামী লীগ। দেশকে জাতির পিতার স্বপ্ন স্বার্থক করে সমৃদ্ধশালী করে তোলার লক্ষ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করে চলছেন দলের নেতা-কর্মীরা। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কাজে লাগিয়ে, মৌলবাদী শক্তিকে পরাস্ত করে, সাধারণ মানুষের উন্নয়নে বদ্ধপরিকর বর্তমান সরকার। এই সরকারের বড় সাফল্য চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। বাংলাদেশ আজ খাদ্যের জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী নয়।  কৃষির উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের খাদ্যের সংস্থান নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ মানুষের উন্নয়নে গত দেড় দশকে অভূতপূর্ব সাফল্য নিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ।

বৈশ্বিক মন্দাকে উপেক্ষা করেই নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমান সরকারের আমলে অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। আওয়ামী লীগ দেশবাসীকে উপহার দিয়েছে, পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। পদ্মা সেতু আজ বাস্তবতা। সমস্ত ষরযন্ত্র প্রতিহত করে আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতুকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয়েছে। পদ্মা সেতুর অর্জনের পর পরই স্বচ্ছ মধুমতির উপরের দেশের ৬ লেনের প্রথম কালনা সেতুও উদ্বোধন করা হয়েছে।  রাজধানী ঢাকার যানজট কাটাতেও আওয়ামী লীগের চেষ্টার ত্রুটি নেই। তাই গোটা দুনিয়া যখন আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে তখন যানজটের ঢাকায় উঁকি দিচ্ছে মেট্রোরেল।  যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন সংযোজন কর্ণফুলী টানেলও। আসলে গত ৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের প্রশ্নে নিজের বাকি তিন বারের শাসনামলকেও পরাস্ত করে উন্নয়নের নতুন রেকর্ড গড়েছেন। আর সেটা হয়েছে খুবই প্রতিকূল সময়ে।

বর্তমান সময়ে করোনা অতিমারিরও মোকাবেলা করতে হয়েছে সরকারকে।  বিশাল পরিমাণ জনগোষ্ঠীর চিকিতসা ও করোনার টিকা দেওয়ার দায়বদ্ধতা সফলভাবেই পালন করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে আওয়ামী লীগ। দেশবাসী জানেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের নৌকাতেই নিরাপদে থাকেন। আর সেই নৌকার হাল যদি বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতে থাকে তবে স্রোতের বিপরীতেও এগিয়ে যেতে সমস্যা হয়না। দেড় দশকের অভিজ্ঞতায় তারা সেটা মনে গেঁথে নিয়েছেন। তাই বারবার আওয়ামী লীগেরই সরকারকেই ক্ষমতায় আনছেন তারা। তবে ষরযন্ত্রের কোনও বিরাম নেই। জাতিরপিতার হত্যাকারীদের উত্তরসূরীরা আজও সক্রিয়। তাই দেশবাসীকে সতর্ক থাকতেই হবে।

মনে রাখতে হবে, ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর থেকে অন্তত ২১ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আক্রমণ। সকলেই জানেন সেই হামলার আসল ষড়যন্ত্রী কারা। বিদেশে বসে এখনও ষরযন্ত্রের চেষ্টা চলছে। কারণ তারা বুঝতে পেরেছে শেখ হাসিনার পাশে রয়েছে বাংলাদেশের অগণিত মানুষের সমর্থন। কারণ ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে দেশ ও দেশবাসীকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর তিনি।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের মতে, ‘যত অপপ্রচারই হোক না কেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আগামীতেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে।’ তিনি বলেছেন, ১৯৭১ সালেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, তার পরও বাংলাদেশের জন্ম ঠেকানো যায়নি। তেমনি বর্তমানেও যত ষরযন্ত্রই হোক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনও ষড়যন্ত্র, পেশিশক্তি ও গানপাউডারে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে জনতা তাদের পাশে থাকবে। আর এ দেশের মানুষ একটাই কথা বলে, শেখ হাসিনার বিকল্প শুধুমাত্র শেখ হাসিনা। জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও আমাদের জয়যুক্ত করবেন’। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল থেকে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়াই এখন আওয়ামী লীগের একমাত্র লক্ষ্য। 

উপরে