বুড়োদের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে চীন | BD Times365 বুড়োদের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে চীন | BdTimes365
logo
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২৩:৪৪
বুড়োদের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে চীন
অনলাইন ডেস্ক

বুড়োদের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে চীন

চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে চীনের জনসংখ্যা নিয়ে এক ভয়ংকর খবর প্রকাশ করা হয়। চীনের একটি বেসরকারি সংস্থার বরাতে বলা হয়, বিগত ছয় দশকের মধ্যে এই প্রথম চীনের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। আগে চীনের জনসংখ্যা ছিলো একশ চল্লিশ কোটি সেখানে এবছর আট লাখ চল্লিশ হাজার মানুষ কমে গেছে।  

জন্মসংখ্যা কমার হার চীনে দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। জন্মহার কম হওয়ায় ২০১২ সাল থেকেই চীন কর্মক্ষম মানুষের সংকট মোকাবেলা করে আসছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই চীন বুড়োদের দেশে পরিণত হবে। এ কারণে দেশটির কর্মশক্তি কমে যাবে এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দেবে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে দেশটির তরুণদের মধ্যে বিশেষত নারীদের সন্তান জন্মদানে অনীহা সৃষ্টি হওয়ায় জনসংখ্যায় এই সংকট দেখা দিয়েছে। যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই চীন বার্ধক্যদের দেশে পরিণত হবে।  

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান ‘ধনী হওয়ার আগেই বুড়ো হয়ে যেতে পারে চীন’ শিরোনোমে চীনের জনসংখ্যা নিয়ে একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।  

জনসংখ্যা হ্রাসের কারণ হিসেবে প্রতিবেদনটিতে দেশটির তরুণ বিশেষ করে তরুণীদের ক্যারিয়ার ভাবনা ব্যক্তিগতভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার মানসিকতা এবং পারিবারিক বিধিনিষেধ না মানার প্রবণতাকে দায়ী করা হয়। 

২৭ বছর বয়সী চাকুরিজীবী চিচি। এই তরুণী মাস্টার্সে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরিও করেন।  পরিবারের চাপ থাকলেও ৩৫ বছরের আগে সাংসারিক জীবন শুরু করতে আগ্রহী নন তিনি। 

সাংসারিক জীবন শুরু করার আগে ছেলেবন্ধু মিলে ২০ লাখ ইওন সঞ্চয় করতে চান যাতে ভবিষ্যতে এই যুগল বেইজিংয়ে নিজস্ব বাড়িসহ অন্যান্য প্রয়োজন পূরণ করতে পারেন।  

তরুণ প্রজন্মের ক্যারিয়ার নিয়ে এত চিন্তা কেন এ নিয়ে বিশ্লেষকরা বলেন, ‘চীনে পড়াশোনাসহ  জীবিকা নির্বাহ করতে প্রচুর অর্থসম্পদের প্রয়োজন। তাই তরুণ প্রজন্ম ক্যারিয়ারকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। ’

অবশ্য সরকার এদিকে দেশের জনসংখ্যা যাতে বৃদ্ধি প্রায় এজন্য ২০১৫ সালে এক সন্তান নীতি থেকে ফিরে এসেছে। এছাড়া বিভিন্ন পলিসিও গ্রহণ করেছে।  নাগরিকদের কমপক্ষে তিনটি সন্তান দিতে উৎসাহ দিচ্ছে। 

নতুন দম্পত্তিদের ৩০ দিন ছুটির ব্যবস্থাসহ দ্বিতীয় ও তৃতীয় সন্তানের জন্য সরকারি প্রণোদনারও ব্যবস্থা রাখছে সরকার।

২০২২ সালে, চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সংখ্যক বিয়ের রেকর্ড পাওয়া যায়। গত বছর দেশটিতে সবচেয়ে কম সংখ্যক দম্পতি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধর কারণে দেশটির জন্মহার হ্রাস পেতে শুরু করেছে। চীন সরকারের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন সরকার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত এক দশকে চীনে বিয়ের হার করে আসছে। কমতে কমতে ২০২২ সালে সর্বনিম্ন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে দেশটির বিবাহ সংখ্যা। ধারনা করা হচ্ছে, এই ঘটনার অন্যতম কারণ হচ্ছে করোনা মহামারি।   
 
চীনের বেসামরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২২ সালে চীনে মাত্র ৬ হাজার ৮৩৩ দম্পতি বিয়ে ও নিবন্ধন করেছেন। যা আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের চেয়ে প্রায় ৮ লাখ কম। 

পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী গত বছরের তুলনায় চীনের বিবাহ ১০ দশমিক পাঁচ শতাংশ কমেছে। যা ১৯৮৬ সালের রেকর্ডকেও হার মানিয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর চীনে শিশু জন্মহার ছিল প্রতি হাজারে ৬.৭৭। বিগত বছর, ২০২১ সালে এটি ছিল সাড়ে সাত শতাংশের বেশি। এটি দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে যা বিশ্ব অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।