৭১'র এই দিনে শত্রুমুক্ত হয় পার্বতীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ | BD Times365 ৭১'র এই দিনে শত্রুমুক্ত হয় পার্বতীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ | BdTimes365
logo
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১২:৫০
৭১'র এই দিনে শত্রুমুক্ত হয় পার্বতীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
অনলাইন ডেস্ক

৭১'র এই দিনে শত্রুমুক্ত হয় পার্বতীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

১৫ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও পার্বতীপুর হানাদার মুক্ত দিবস।

দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে ১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে মুক্ত করেছিলো বাংলার দামাল ছেলেরা। উড়িয়েছিলো স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।

আর ১৫ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধা ও বীর জনতা পার্বতীপুর শহরে প্রবেশ করে বড় বড় ভবনে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে বিজয়োল্লাস করেন।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৭ নভেম্বর লে. রফিকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা চাঁপাইনবাবগঞ্জের মকরমপুর ও আলী নগরে অবস্থিত পাক বাহিনীর ঘাঁটিতে অতর্কিত আক্রমণ চালালে পাঁচ পাক সেনা নিহত হয়। এ সময় অন্যরা মহানন্দা নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়।

১০ ডিসেম্বর চরবাগডাঙ্গা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা অগ্রসর হন এবং পাক সেনাদের বাঙ্কার দখল করে নেন। ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা শহর দখলের জন্য মহানন্দা নদীর ওপারে বারঘরিয়ায় অবস্থান নেন।

১৪ ডিসেম্বর ভোর রাতে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর তার বিশাল বাহিনীকে তিন ভাগে ভাগ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের জন্য আক্রমণ শুরু করেন।

রাতের আঁধার পুরোপুরি কেটে যাওয়ার আগেই পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির জানালা থেকে পাক বাহিনীর ছোড়া একটি বুলেট ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের কপালে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তিনি শহীদ হন।

পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি অভিযানে পাকিস্তানিরা পিছু হটলে মেজর গিয়াস, লে. রফিক, লে. কাইউম, ডা. মইন উদ্দীন আহমেদ মন্টু ও শাহাজাহান মিয়ার নেতৃত্বে মক্তিযোদ্ধারা দলে দলে শহরে প্রবেশ করলে শত্রুমুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

পার্বতীপুরে গেরিলা হামলা তীব্ররূপ ধারণ করে আগস্টের শেষের দিকে । আনন্দবাজার, পাটিকাঘাট (গুড়গুড়ি) এলাকায় গেরিলা ক্যাম্প বসানো হয়। হাবড়া আমবাগান, সাঁকোয়ার ব্রিজ ও মনমথপুর রেল স্টেশনে বড় বড় যুদ্ধ সংঘঠিত হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে চৌহাটি, ঘুঘুমারি, আমডুংগির হাট, ভবানীপুর, হাবড়া, খোলাহাটি, বেলাইচন্ডি, হরিপুর, তাজনগর এলাকার পাকসেনা ও রাজাকার ক্যাম্পগুলো গুড়িয়ে দিলে অবাঙালিরা পার্বতীপুর ত্যাগ করতে শুরু করে।

মিত্র বাহিনী ১৪ ডিসেম্বর পার্বতীপুরে বোম্বিং শুরু করে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর বোমাবর্ষণ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে হানাদার বাহিনী-অবাঙালিরা শেষ রাতের মধ্যেই রেলপথ ও সড়ক পথে নীলফামারীর সৈয়দপুরে পালিয়ে যায়।

পাক সেনাদের শেষ সামরিক গাড়িটি পালাবার পথে পার্বতীপুর-সৈয়দপুর সড়কের বান্নিঘাটে পেতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে উড়ে গেলে চালকসহ একজন কর্নেল, একজন মেজর ও একজন লেফটেন্যান্ট নিহত হয়।

১৫ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধা ও বীর জনতা পার্বতীপুর শহরে প্রবেশ করে রেলওয়ে থানা, শোয়েব ভবনসহ বড় বড় ভবনে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

 

বিডিটাইমস৩৬৫ ডটকম/একে