আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১১:৩৫
অনন্য এক নারী মুক্তিযোদ্ধা

‘শেখের বেটি একখান কামের কাম করছে’-বীরপ্রতিক তারামন বিবি

রাজীবপুর উপজেলার কৃতি সন্তান বীর প্রতীক তারামন বিবি। মুক্তিযুদ্ধের গৌরব, নারী সমাজের অহংকার তিনি। ১৯৫৭ সালের জানুয়ারী মাসে কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে এই মহিয়সী নারীর জন্ম। বিজয়ের মাসে তাঁর সাথে কথা বলেছেন বিডিটাইমস৩৬৫ডটকমের প্রতিবেদক সোহেল রানা স্বপ্ন ও শফিকুল ইসলাম। মুক্তিযুদ্ধে কিভাবে অংশগ্রহণ করেছেন তাই জানালেন তিনি-
বিডিটাইমস ডেস্ক
‘শেখের বেটি একখান কামের কাম করছে’-বীরপ্রতিক তারামন বিবি

মুক্তিযুদ্ধের সময় তারামন বিবি তাঁর নিজ গ্রাম ছেড়ে চলে আসেন পার্শ্ববর্তী পশ্চিম রাজীবপুর গ্রামে। সেখানে একদিন হাবিলদার মুহিব আজিজ এর সাথে দেখা হয় তারামন বিবির। হাবিলদার মুহিব আজিজ তাঁকে মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পে রান্না করার জন্য নিয়ে যান এবং ধর্ম মেয়ে হিসেবে স্বীকৃতি দেন। এভাবেই শুরু হয় তারামন বিবির মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন।

তারামন বিবির বাড়ি

একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করছেন তারামন বিবি

রান্না করার পাশাপাশি তিনি মাঝেমধ্যে ক্যাম্পের মুক্তিযোদ্ধাদের ষ্টেনগানটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে দিতেন। তাঁর প্রবল আগ্রহ দেখে হাবিলদার সাহেব মুগ্ধ হন। তিনি তারামন বিবিকে রাইফেল ও ষ্টেনগান চালানো শিখিয়ে দেন। মাঝেমধ্যে তারামন বিবি ব্যাংকারে অবস্থান নিয়ে ওস্তাদদের সাথে গুলিও চালিয়েছেন। যুদ্ধ করার পাশাপাশি করেছেন গোয়েন্দাগিরিও। অনেক সময় একটি কলা গাছ বুকে নিয়ে বিশাল নদী পার হয়ে শত্রুদের অবস্থান দেখে এসে ক্যাম্পে জানিয়েছেন। পরে সেসব জায়গায় মুক্তিবাহিনী অপারেশন করে সফল হয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় পাগলি, বোবা, পা খোড়ার ভূমিকায় অভিনয় করে পাক বাহিনীর ক্যাম্পের ভিতরে ঢুকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে মুক্তি বাহিনীদের অবহিত করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারামন বিবি ১১ নং সেক্টরের এরিয়াগুলোতে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন।
বীর প্রতিক তারামন বিবি বলেন, ‘জীবন বাজি রাইখা এই দ্যাশ স্বাধীন করছি। এহন জীবনের শেষ সময় আইসা গেছে। অসুখ-বিসুখ সারাদিন লাইগাই আছে। কেউ তেমন খোঁজ খবর রাহে না। মরবার আগে রাজাকারগো বিচার অইছে দেইহা আমার খুব খুশি লাগতাইছে । শেখের বেটি একখান কামের কাম করছে।’

 

উপরে