আপডেট : ২২ নভেম্বর, ২০১৫ ১২:২৬

রাজধানীতে প্রকাশ্যে হিজড়াদের নগ্ন ব্ল্যাকমেইলিং

অনলাইন ডেস্ক
রাজধানীতে প্রকাশ্যে হিজড়াদের নগ্ন ব্ল্যাকমেইলিং

তৃতীয় লিঙ্গ বা থার্ড জেন্ডার হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হিজড়া সম্প্রদায় বর্তমান সময়ে সাধারণ মানুষের কাছে এক মূর্তিমান আতংক ও ভয়ঙ্কর চরিত্র হিসেবে দেখা দিয়েছে। রাজধানী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হিজড়া বাহিনী। চাঁদা আদায়ে নগরীর অলিগলি চষে বেড়াচ্ছে তারা। হিজড়াদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন রাজধানীর ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। চাঁদা নেয়ার তালিকা থেকে বাদ পড়ছে না ফেরিওয়ালারাও। এমনকি বাসাবাড়িতেও হানা দিচ্ছে তারা। এ ক্ষেত্রে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কোনো সদস্যকেই পাত্তা দিচ্ছে না। কেউ বাধা দিলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হচ্ছে। যে কারণে সামর্থ্য না থাকলেও অনেকে তাদের চাহিদামাফিক টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নামে বিভক্ত হয়ে অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে সর্বত্র চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছে তারা। এ ছাড়া শিশু নাচানোর নাম করে পরিবারের কাছ থেকে জোর করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। ইদানীং তাদের মাত্রাতিরিক্ত অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন রাজধানীবাসী। হিজড়াদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না, যে কারণে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। পক্ষান্তরে, বিপদে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ি থেকে হিজড়াদের টাকা তোলা নতুন কিছু নয়। বছরের পর বছর ধরে হিজড়াদের টাকা তোলার এই রীতি চলে আসছে। মানুষও সাধ্যমতো তাদের টাকা ও বিভিন্ন মালামাল দিয়ে সহযোগিতা করে আসছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে হিজড়াদের আচরণ বদলে গেছে। পাল্টে গেছে তাদের টাকা চাওয়ার ধরনও। আগের দিনের সেই টাকা তোলা এখন চাঁদা আদায়ে পরিণত হয়েছে। রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট যেখানে-সেখানে মানুষকে টাকার জন্য নাজেহাল করছে। চাঁদার জন্য মানুষকে জিম্মি করে ফেলা হচ্ছে। হিজড়াদের কাজে কেউ বাধা দিলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হচ্ছে। প্রকাশ্যেই কাপড়-চোপড় খুলে ফেলছে। বিশেষ ভঙ্গিতে হাততালি দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। নগ্ন হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। সঙ্গে অশ্লীল সব খিস্তি।

দে- টাকা  দে- দিবিনা-। এভাবেই এক সংঘবদ্ধ হিজড়া দল দোকানপাটে, কাঁচা বাজারে, রিক্সা, ভ্যান, এমনকি যানবাহনে দলবেধে হুংকার দিয়ে চাঁদাবাজি করেছে। চাহিদামত টাকা না দিয়ে তাদের হাতে অনেকেই নাজেহাল হয়েছেন। হিজড়াদের আচার আচরণ যেন সাধারন মানুষের ইজ্জত কেড়ে নেওয়ার মত। বাচাঁর উপায় নেই। ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু অসহায় অবস্থায় দিতে হচ্ছে হিজড়াদের চাহিদার চাঁদা। কিন্তু সবাই নির্বিকার।

হিজড়াদের প্রকাশ্য চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ রাজধানীর সব শ্রেণি পেশার মানুষ। কোনো ভিত্তি না থাকলেও এদের ভয় পায় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। অফিস-আদালত, বিপনি বিতান, বাসা-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, পরিবহন সর্বত্র এদের উপস্থিতি জনমনে রীতিমত আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। একবার কাউকে ধরে বসলে চাঁদা না দিয়ে তার রক্ষা নেই। না দিলে পরনের কাপড় খুলে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে ফেলা হয় পরিবেশকে। এভাবে অবিরাম চলছে হিজড়াদের প্রকাশ্য নগ্ন ব্ল্যাকমেইলিং। পুলিশ সদস্যরাও পর্যন্ত হিজড়াদের ভয় পায়। আক্রান্তের ভয়ে অনেক ক্ষেত্রে হিজড়াদের প্রকাশ্য ব্ল্যাকমেইলিং দেখেও নীরব দর্শকের ভুমিকা পালন করেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। হিজড়াদের আইন আদালত বুঝিয়ে লাভ নেই। এরা বেপরোয়া জীবন যাপনে অভ্যস্ত। পাঁচ দশ টাকার জন্য ছোট বাচ্চা কিংবা মেয়ে লোকের সামনে কাপড় খুলতে দ্বিধা করে না হিজড়ারা।

কেউ কিছুই বলে না তাই একেবারে ফ্রি স্টাইলে হিজড়ারা ফুটপাত থেকে আরম্ভ করে ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী সকল সাধারণ মানুষের ঘাড়ের উপর ঝেকে বসেছে। তাদের তৎপরতা এতটাই অস্বাভাবিক আকার ধারণ করেছে যে তারা মানুষের কোন সমস্যা ও অসুবিধার ধার ধারে না। পরে আসতে বললেও শুনে না। শুধু নিজেরটা বুঝে ১৬ আনা। তাই দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সাধারণ মানুষ শুধু একটা কথা সরকার থেকে জরুরী এদের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে। একমাত্র সরকারই পারে বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে এদের পুনর্বাসন ও স্বাভাবিক জীবন-ধারায় নিয়ে আসতে। সাধারণ মানুষের করম্নণ আকুতি হিজড়াদের কবল থেকে আমাদের রক্ষা করুন, বাঁচান। আমরা আর বিব্রতকর পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে চাই না।

বিডিটাইমস৩৬৫ডটকম/এস, এম বাপ্পী

উপরে