আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১১:০৫

সৌদিতে নেতৃত্বে নারীরা

বিডিটাইমস ডেস্ক
সৌদিতে নেতৃত্বে নারীরা

সৌদি আরবের ইতিহাসে প্রথম বারের মত নারীরা নির্বাচনে অংশ নেয়ার পর অন্তত ১৭ জন নারী পৌরসভা কাউন্সিল আসনে জয় লাভ করেছে।

রবিবারের ভোটে কেবল নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ নয়, পুরুষের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইও করেছেন সৌদি নারীরা। প্রথম বারেই যে নারীরা এমন সাফল্য পাবেন, তা ভাবতে পারেননি কেউই।

সৌদি মাধ্যমের বরাত দিয়ে আনন্দ বাজার জানায়, মক্কার প্রথম নারী কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সালমা বিন্ত হিজাব আল-ওতেইবি নামে এক নারী প্রার্থী।

এর পর সময় যত এগিয়েছে, জয়ী নারী প্রার্থীদের সংখ্যাটাও ক্রমশ বেড়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রাথমিক ভাবে ভোটের যে ফল প্রকাশ হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, সালমা-সহ অন্তত ১৭ জন নারী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।

সালমা ছাড়াও জয়ীদের মধ্যে রয়েছেন ইহসা, দু’জন জেদ্দা, দু’জন তোবুক এবং এক জন আল-জউফ এলাকার।

সৌদি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মক্কা প্রদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রাম মাদ্রাকা থেকে জয়ী হয়েছেন সালমা।

ওই আসনে সাত জন পুরুষ এবং দু’জন নারী প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়াই করেছেন তিনি।

সৌদি আরবের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর জেদ্দার জয়ী প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন লামা আল-সুলেমান ও রাশা হুফাইথি নামের দুই নারী প্রার্থী।

আল-জউফে জয়ী হয়েছেন হানৌফ আল-হাজিমি নামের নারী। ওই আসনে তিনি ১৩ জন পুরুষের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

তোবুকের কাউন্সিলর হিসেবে জয়ী হয়েছেন দুই নারী।  তারা হলেন, মোনা এল-এমারি এবং ফাধিলা আল-আত্তাওয়ি। আর ইহসায় জিতেছেন সানা আল-হাম্মাম এবং মাসুমা আবদেলরেদা।

সালমা বা লামা— এঁদের লড়াইটা সহজ ছিল না। এর জন্য পেরোতে হয়েছে নানা বিপত্তি।

কারণ সৌদি আরবের মতো দেশে যেখানে মেয়েদের গাড়ি চালানোর অধিকারটুকুও নেই। এমনকি কোথাও যেতে গেলেও পুরুষ অভিভাবকদের অনুমতি নিতে হয়। চাকরি করলেও মেলে না স্বাধীনতা।

পুরুষদের মতো সহজেই বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারেন না নারীরা। অথচ তেল সমৃদ্ধ এই দেশ অন্যান্য বিষয়ে বেশ এগিয়ে।

জানুয়ারিতে মারা যান সৌদি রাজা আবদুল্লা। রাজা থাকাকালীনই তিনি মেয়েদের ভোট দেওয়ার অধিকার দিয়েছিলেন। ক্যাবিনেটের পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করে ‘শুরা কাউন্সিল’। সেই সংগঠনে আবদুল্লাই প্রথম ৩০ জন মহিলাকে নিয়োগ দেন।

তার পরেও কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। দেশে এই নিয়ে তৃতীয় বার ভোট অনুষ্ঠিত হল। আর সেই ভোটে প্রথমবার ভোট দেয়ার পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করলেন নারীরা।

তবে এই ভোটের প্রচারে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে নারী প্রার্থীদের। পুরুষ ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে কথা বলতে পারেননি নারী প্রার্থীরা। আর নারী ভোটারদের ক্ষেত্রেও ছিল প্রায় একই রকম নিষেধাজ্ঞা।

কারণ একা নির্বাচন কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দানের অনুমতিও ছিল না। ভোট দিতে যাওয়ার জন্য নির্ভর করতে হয়েছে সেই পুরুষ অভিভাবকদের উপর।

প্রথম ভোট নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপও সহ্য করতে হয়েছে নারীদের।

তবে পরিস্থিতি যা-ই হোক, প্রথম বার স্বাধীন মতপ্রকাশ করতে পেরে উচ্ছ্বসিত নারীরা।

বিডিটাইমস৩৬৫ডটকম/আরআর

উপরে