ইমোতে পাঠানো হচ্ছে নির্যাতনের ভিডিও , নেওয়া হচ্ছে মুক্তিপণ | BD Times365 ইমোতে পাঠানো হচ্ছে নির্যাতনের ভিডিও , নেওয়া হচ্ছে মুক্তিপণ | BdTimes365
logo
আপডেট : ৩০ মার্চ, ২০২৪ ০১:৪৪
ইমোতে পাঠানো হচ্ছে নির্যাতনের ভিডিও , নেওয়া হচ্ছে মুক্তিপণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইমোতে পাঠানো হচ্ছে নির্যাতনের ভিডিও , নেওয়া হচ্ছে মুক্তিপণ

উন্নত জীবনের আশায় বিদেশে পাড়ি দিতে গিয়ে দালালের ফাঁদে আটকা পড়েছেন আনোয়ারা উপজেলার চার যুবক। নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা নিয়ে যুবকদের লিবিয়ায় পাঠিয়ে তুলে দেওয়া হয় সংঘবদ্ধ চক্রের হাতে। এরপর তাদের ওপর নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে চাওয়া হচ্ছে মুক্তিপণের টাকা।

নির্যাতনের শিকার যুবকরা হলেন- রায়পুর ইউনিয়নের মধ্যম গহিরা বাচা মিয়া মাঝির ঘাট এলাকার নুরুল আলমের ছেলে মো. ওয়াসিম (২২), একই এলাকার মৃত মোজাহের মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিন (১৯), আবদুর রহিমের ছেলে জাবেদুর রহিম (১৯) ও জেবল হোসেনের ছেলে নাঈম উদ্দিন (২০)।

মুক্তিপণ দাবি করে নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ পাঠানোর ঘটনাটি গত বুধবার (২৭ মার্চ) বিকালে অভিভাবকরা আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ওসিকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

অপহৃতদের স্বজনরা জানান, রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম ফেব্রুয়ারিতে জনপ্রতি ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা করে নেয়। কথা ছিল লিবিয়ার হাসপাতালে তাদের চাকরি দেবেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তারা লিবিয়া পৌঁছায়। লিবিয়ায় পৌঁছানোর ৩-৪ দিন আগ থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে হোয়াটঅ্যাপ, ইমোতে ফোন করে আরও টাকা চাওয়া হয়।

ভিকটিম চারজন লিবিয়া পৌঁছার পর জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা দাবি করে তাদের নির্যাতন করা শুরু হয়। সেই নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো শুরু হয় পরিবারের সদস্যদের কাছে। স্বজনরা আরও জানান, চট্টগ্রামের জহিরুল ভিকটিমদের ট্যুরিস্ট ভিসায় প্রথমে দুবাই নিয়ে যায়। সেখানে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার বাসিন্দা মো. মিজান নামে এক লোকের হাতে তুলে দেন। মিজান তিন দিন পর তাদের সবার পাসপোর্ট নিজের কাছে নিয়ে নেন। সাত দিন পর দুবাই থেকে মিশর হয়ে লিবিয়া নিয়ে গিয়ে মিজান অন্য দালালের হাতে বিক্রি করে দেন এই চার যুবককে।

লিবিয়ায় তাদের মাসখানেক কিছু কাজ দেওয়ার পর সর্বশেষ গত সোমবার (২৫ মার্চ) তাদের বন্দি করে রাখা হয়। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) পরিবার ও স্বজনদের কাছে কয়েকটি নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ ও অডিও বার্তা পাঠায় দালালচক্র। ভিডিও বার্তায় জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে এবং এসব টাকা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের চকরিয়া শাখার একটি হিসাব নম্বরও দেয়। মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হলে জীবন দিতে হবে চার জিম্মিকে। এ জন্য বেঁধে দেওয়া হয় সময়ও। বুধবার বিকাল তিনটার মধ্যে যত পারে, তত টাকা দিতেও বলা হয়। টাকা না দিলে একজন-একজন করে লাশ পাঠাবে বলে স্বজনদের জানিয়েছে দালালরা।

জাবেদুর রহিমের বাবা আবদুর রহিম বলেন, ‘টাকা ও স্বর্ণালংকার যা ছিল, সব বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছি। সেখানে ছেলে প্রতারণার শিকার হয়েছে। এখন ১০ লাখ টাকা দিলে ছেলেকে ফেরত দেবে বলে বলছে অপরণকারীরা। এ মুহূর্তে এত টাকা কই পাব আমি।’

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন বলেছেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।