নির্বাচন আসতেই দেশ-বিদেশে যড়যন্ত্র শুরু | BD Times365 নির্বাচন আসতেই দেশ-বিদেশে যড়যন্ত্র শুরু | BdTimes365
logo
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৮:২৪
নির্বাচন আসতেই দেশ-বিদেশে যড়যন্ত্র শুরু
ইমরুল ইসলাম সুমন

নির্বাচন আসতেই দেশ-বিদেশে যড়যন্ত্র শুরু

নির্বাচন আসছে। তাই ফের শুরু হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের ষড়যন্ত্র। দেশে অস্থির পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতা দখলে লিপ্ত দুই দল। প্রকাশ্যে জোট না করার কথা বললেও গোপনে গোপনে তারা অশান্তি বাধানোর চেষ্টায় মত্ত। তাদের সঙ্গে এবার হাত মেলাতে দেখা যাচ্ছে কিছু অতি বাম নেতাদেরও। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়ে দিয়েছেন, সরকার বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা না দিলেও ধংসাত্মক কর্মকাণ্ডকে কড়া হাতে মোকাবেলা করবে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকেই এবার সরকার মানুষের জীবন ও মালামাল রক্ষা করতে আগাম সতর্ক।

আসলে বিএনপি দলটার জন্মই তো হয়েছে পেছনের দরোজা দিয়ে, ক্ষমতায় থেকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার অন্যতম ষরযন্ত্রী জিয়াউর রহমান বেআইনিভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করার পর বিএনপি দল গঠন। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের জন্মই হয় লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে।  জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী, শেখ ফজলুল হক জনগণকে নিয়ে ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ দলটির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আওয়ামী লীগের জন্মের পর বলা হয়েছিল, ‘আমাদের সংগঠন জনগণের সংগঠন। আমাদের সংগঠনের শেকড় মাটির ভেতর’।  বঙ্গন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকেও জনগণের সঙ্গে সেই সম্পৃক্ততা বজায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। কারণ বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে এবং তাদের উন্নয়নে কাজ করে চলেছে দলটি।

বিএনপির ক্ষমতা দখল চিরকালই পেছনের দরোজা দিয়ে। জনগণের ভোটে নির্বাচনে জিতে তারা কখনওই ক্ষমতায় আসেনি। ভোট চুরি ও সন্ত্রাস তাদের জন্মলগ্ন থেকেই বিরাজমান। এবারও তাই ভোট আসতেই বিএনপি-জামায়াত আবারও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।  সেই ষরযন্ত্রের সন্ধান পেয়ে সঠিক কথাই বলেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকট আনিসুল হক। বিএনপি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তারা কখনো সামনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসে নাই। সব সময় পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। মানুষকে ভোট দিতে দেয় নাই’।

বিএনপি-জামায়াতের এই ষরযন্ত্র রুখতে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তারা সচেষ্ট। বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা রুখতে সাধারণ মানুষকেও সক্রিয় থাকতে হবে। দেশের অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা রুখতে আওয়ামী লীগ দেশ জুড়ে শান্তি সমাবেশ করছে। কিছুতেই বিএনপি-জামায়াত জোটকে মাঠ ছেড়ে দেওয়া চলবেনা। কারণ সুযোগ পেলেই তারা দেশকে বিপদের দিকে ঠেলে দেবে।

তাই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক সম্প্রতি বলেছেন, 'এক শ্রেণির মানুষ সমাজে শান্তি বিনষ্ট করে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জামায়াত-বিএনপি এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত কিছু বিএনপির উচ্ছিষ্টভোগী অতি বাম ও অতি ডান, যাদের কোনো জনসমর্থন নেই, নির্বাচন আসলেই ষরযন্ত্র করার জন্য তারা সক্রিয় হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের অর্জন এরা চোখে দেখে না। জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে দেখেই এরা ষড়যন্ত্র করতে একাট্টা হয়।'

আসলে বাংলাদেশের প্রতি বিএনপির কোনও ভালবাসা নেই। তাই তারা ক্ষমতায় থাকার সময় মাদক চোরাকারবারিরা অতি সক্রিয় হতে পেরেছিল। এদেশের যুব সম্প্রদায়কে ধংস করতে বিএনপি বাংলাদেশে মাদক কারবারীদের প্রশ্রয় দিয়েও অর্থ উপার্জন করে। আসলে তারা চায় না এদেশে একটি সুস্থ পরিবেশ থাকুক। তাই প্রয়াত জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেই কিছু ছাত্রের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। তাদের নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়েও দিয়েছিলেন তিনি। বিএনপি সবসময়ই চেয়েছে দেশটা ধ্বংস হয়ে যাক। জামায়াতের সঙ্গে তাই তাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মেলাতে বিএনপির কোনো সঙ্কোচ নেই। কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গেও বেইমানি করেছেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। আজ সকলেই জানেন, জাতিরপিতার হত্যাকাণ্ডের ষরযন্ত্রেও জড়িত ছিলেন তিনি। তাই ক্ষমতা দখলের জন্য ধংসাত্মক ষরযন্ত্র করতে তাদের কোনও অসুবিধা হয় না।

কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, দেশনেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও ষরযন্ত্রকে কার্যকর করতে তিনি দেবেন না। নির্বাচনের বহু আগেই তার সাফ কথা, ‘সরকার বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেবে না, তবে কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না’। তিনি আরও বলেছেন, ‘সর্বত্র ক্যামেরা থাকবে এবং কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করলে দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে’। এই দুই দল সম্পর্কে জনগণকে মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, 'তারা (বিএনপি-জামায়াত) ধ্বংস করতে জানে, কিছু তৈরি করতে জানে না, মানুষের সেবা করতে জানে না, তারা শুধু দুর্নীতি ও লুটপাট করতে জানে এবং সেই সঙ্গে স্বার্থ পূরণ করতে জানে।'

জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে অবশ্য নতুন করে ছলনা শুরু করেছে। দুটি দলই গোপেন নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রাখলেও সখ্যতা প্রকাশ্যে দেখাতে চাইছে না। কিন্তু তাদের এই গোপন আঁতাতের কথা আজ আর গোপন নেই। বিবিসির প্রতিবেদনেও উঠে আসছে বিএনপি-জামায়াত গোপন বোঝাপড়ার বিষয়টি। বিএনপি আসলে বাংলাদেশের মানুষকে বোকা বানাতে চাইছে। সেইসঙ্গে বিদেশীদের বোঝাতে চাইছে মৌলবাদী শক্তি জামায়াতের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু উভয় দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যায় বোঝাপড়ার মধ্যে দিয়েই দুটি দল বাংলাদেশকে ধংসের দিকে নিতে চাইছে। লন্ডনে বসে তারেক রহমান এবং পাকিস্তান থেকে জামায়াতের পরামর্শদাতারা নির্বাচনের আগে বাংলাদেশকে অস্থির করে তুলতে চায়। জঙ্গিবাদীদের বিরুদ্ধে হাসিনা সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিলেও মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানকারীদের স্বার্থে প্রায় দুদশক পর ফের ক্ষমতায় ফিরতে নানাধরনের ষরযন্ত্র চলছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামায়াত-বিএনপির ষরযন্ত্র ধরে ফেলেছেন। তাই দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে পরাস্ত করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন তিনি। দেশবাসীর ভরসা, অতীতের মতোই এবারও মৌলবাদী ও পাকিস্তানপন্থীদের পরাস্ত করে শেখ হাসিনা ফের জাতিরপিতার স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে সক্রিয় হবেন।