মিথ্যা মামলায় শাস্তির বিধান সাইবার নিরাপত্তা আইনে | BD Times365 মিথ্যা মামলায় শাস্তির বিধান সাইবার নিরাপত্তা আইনে | BdTimes365
logo
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৯:৫১
মিথ্যা মামলায় শাস্তির বিধান সাইবার নিরাপত্তা আইনে
নিজস্ব প্রতিবেদক

মিথ্যা মামলায় শাস্তির বিধান সাইবার নিরাপত্তা আইনে

মিথ্যা কথা বলে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা দিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করে সাজার বিধান যুক্ত করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মিথ্যা মামলার শিকার হওয়া ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দিলে আদালত তা আমলে নেবে। এমন বিধান যুক্ত করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি এই আইনটির রিপোর্ট সংসদে উপস্থাপন করেছে।

রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন কমিটির সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) কয়েকটি সাংবাদিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব সুপারিশ চূড়ান্ত করে কমিটি। এছাড়া বিলের ৩২ নম্বর ধারা বাদ দেওয়াসহ কয়েকটি ধারায় শব্দগত পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

বিলে নতুন একটি ধারা যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনও ব্যক্তি অন্য কোনও ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের অন্য কোনও ধারার অধীন মামলা বা অভিযোগ দায়ের করার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ না জেনেও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান, তাহলে তা হবে একটি অপরাধ। এই অপরাধে মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তি এবং যিনি অভিযোগ দায়ের করিয়েছেন ওই ব্যক্তি মূল অপরাধটির জন্য যে দণ্ড নির্ধারিত রয়েছে সে দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

যদি এই আইনের একাধিক ধারায় কোনও মামলা বা অভিযোগ করেন, তাহলে ওই ধারায় বর্ণিত অপরাধগুলোর মধ্যে মূল অপরাধের জন্য যে দণ্ডের পরিমাণ বেশি হয় সেটাই দণ্ডের পরিমাণ হিসাবে নির্ধারণ করা যাবে।

বিলে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল এই অপরাধের অভিযোগ গ্রহণ ও মামলার বিচার করতে পারবেন।

বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর সাইবার নিরাপত্তা বিল সংসদে তোলা হয়। এরপর বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

এছাড়া বিলের ২১ ধারায় শব্দগত পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনও প্রকার প্রপাগান্ডা ও প্রচারণা সংক্রান্ত অপরাধের কথা বলা আছে। এখানে ‘পতাকার বিরুদ্ধে কোনও প্রকার প্রপাগান্ডা’ -এর স্থলে ‘পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক’ শব্দ প্রতিস্থাপন করা হবে।

বিলের ৩২ ধারা বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই ধারায় অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট যুক্ত করা হয়েছিল। ডিজিটাল মাধ্যমে কেউ অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টভুক্ত অপরাধ করলে তার সাজার বিধান করতে এটি যুক্ত করা হয়েছিল।

বিলের ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া আছে পুলিশকে। এখানে সংশোধনী এনে বলা হচ্ছে, এই ধারায় সাব-ইন্সপেক্টর পর্যায়ের কর্মকর্তার জায়গায় পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) পর্যায়ের কর্মকর্তা বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতার করতে পারবেন।

বিলের ৮ ধারায়ও সংশোধনী আনা হচ্ছে। ডিজিটাল মাধ্যম থেকে তথ্য-উপাত্ত অপসারণ ও ব্লক করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এই ধারায়। এখানে আগে বলা ছিল যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘প্রতীয়মান’ হয় ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনও তথ্য-উপাত্ত দেশের বা এর কোনও অংশের সংহতি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্ন করে বা জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার সঞ্চার করে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করার জন্য মহাপরিচালকের মাধ্যমে বিটিআরসিকে অনুরোধ করতে পারবে।

এখানে ‘প্রতীয়মান’ শব্দের জায়গায় ‘তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ সাপেক্ষে, বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে’ প্রতিস্থাপন করা হবে।