যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মামলায় আটক খুলনার মো. সামির | BD Times365 যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মামলায় আটক খুলনার মো. সামির | BdTimes365
logo
আপডেট : ২৮ আগস্ট, ২০২৩ ০১:০০
অনলাইনে ৩০ কিশোরীর নগ্ন ছবি সংগ্রহ
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মামলায় আটক খুলনার মো. সামির
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মামলায় আটক খুলনার মো. সামির

মো. সামির (২০) নামে খুলনার এক তরুণ অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপ ডিসকর্ড ব্যবহার করে দুই শতাধিক  কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর ফাঁদে ফেলে তাঁদের নগ্ন ছবি সংগ্রহ করেছেন। সামির ২০২১ সালে রাজশাহীর একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও করোনার কারণে আর ক্লাস করেননি।  মা-বাবা তাঁকে বাইরে কোথাও যেতে দিতেন না। একাকিত্বের কারণে তাঁর মুঠোফোনে আসক্তি তৈরি হয়। সেই থেকে বিকৃত মানসিকতা গড়ে ওঠে এই তরুণের। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের করা একটি মামলার তদন্ত করে খুলনার ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর মুঠোফোন ও ল্যাপটপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ তিন দেশের অন্তত ৩০ কিশোরীর দেড় শতাধিক নগ্ন ছবি উদ্ধার করা হয়েছে।

তদন্ত–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খুলনা শহরের সোনাডাঙ্গা থানার নিউমার্কেট এলাকার ছেলে সামির রাজশাহীর একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা ২১ আগস্ট তাঁর বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। পরে আদালতের অনুমতিতে তাঁকে দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আদালতের নির্দেশে গতকাল শনিবার সামিরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সিটিটিসি কর্মকর্তারা জানান, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের আঞ্চলিক কর্মকর্তা মাইকেল লি গত ২৬ জুলাই গুলশান থানায় একটি জিডি করেন। তাতে অভিযোগ করা হয়, সামির পরিচয়ে বাংলাদেশের এক নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে প্রলুব্ধ করে তাকে দিয়ে তার পর্নো ছবি তুলে নিয়ে নিয়েছেন। ডিসকর্ড অ্যাপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ওই কিশোরীর সঙ্গে সামিরের যোগাযোগ ও সম্পর্ক হয়। পরে তিনি ওই অ্যাপ এবং তাঁর ই–মেইলে কিশোরীর তোলা পর্নো ছবি নিয়ে নেন। কিশোরীর মায়ের যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটিতে করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গুলশান থানায় ওই জিডি করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তা মাইকেল লি। ডিএমপি কমিশনার সিটিটিসিকে জিডি তদন্তের দায়িত্ব দেন।

জিডির তদন্ত তদারক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করতে গিয়ে তাঁরা সামির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পান। এরপর ২১ আগস্ট মার্কিন দূতাবাসের লি বাদী হয়ে মো. সামিরকে আসামি করে গুলশান থানায় ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। এরপর সামিরের অবস্থান শনাক্ত করে খুলনার সোনাডাঙ্গার বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তা মাইকেল লির করা মামলায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী গত মার্চ মাসে ডিসকর্ড অ্যাপে ক্যালিফোর্নিয়ার ওই কিশোরীর সঙ্গে সামিরের বন্ধুত্ব হয়। বন্ধুত্বের একপর্যায়ে সামির কিশোরীর পর্নো ছবি তার কাছ থেকে চেয়ে নেন। এ ছাড়া কিশোরীকে ওয়েব ক্যামেরার সামনে এনে তার বিবস্ত্র ছবি তুলে নেন সামির। পরে কিশোরী সামিরের অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তবে সামির বিভিন্নভাবে ওই কিশোরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন।

সামিরের মুঠোফোন ও ল্যাপটপের পরীক্ষা করেছেন সিটিটিসির ফরেনসিক ল্যাবের এডিসি ইশতিয়াক আহমেদ। তার তথ্যমতে, সামিরের মুঠোফোনে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার অন্তত ৩০ কিশোরীর ১৬৪টি পর্নো ছবি পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সামির বলেছে, এসব ছবি সংগ্রহে রাখা তাঁর শখ ছিল। এগুলো তিনি বেচাকেনা করতেন না।