মাশরাফির হ্যাটট্রিকে শেষ হাসি কুমিল্লার | BD Times365 মাশরাফির হ্যাটট্রিকে শেষ হাসি কুমিল্লার | BdTimes365
logo
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ২২:৩৩
মাশরাফির হ্যাটট্রিকে শেষ হাসি কুমিল্লার
স্পোর্টস ডেস্ক

মাশরাফির হ্যাটট্রিকে শেষ হাসি কুমিল্লার

বিপিএলের তৃতীয় আসরের ফাইনালটি হলো শাসরুদ্ধকর! শথেষ বলের নাটকীয়তায় প্রথমবারের মতো বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন হলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। অলক কাপালির বীরোচিত অপরাজিত ৩৯ রানে বরিশাল বুলসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা। ৩ উইকেটে জিতেছে কুমিল্লা।

শেষ দুই ওভারে কুমিল্লার দরকার ২৩ রান। ১৯তম ওভারের নাটকীয়তায় ম্যাচ ঝুঁকে যায় বরিশালের দিকে। ওই ওভারে কেভন কুপারের প্রথম দুই বলে ড্যারেন স্টিভেন্স (০) ও মাশরাফি বিন মুর্তজা (০) আউট! তৃতীয় বল ডট। পরের তিন বলে দুই বাউন্ডারিতে কাপালি নিলেন ১০ রান!

মোহাম্মদ সামির শেষ ওভারের প্রথম বলে দুই রান নিতে গিয়ে শুভাগত হোম রান আউট! ১ হলো। ৫ বলে দরকার ১২। ১ রান নিয়ে কাপালি স্ট্রাইকে। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে বাউন্ডারি! পরের বলে ২! স্কোর সমান। শেষ বলে দরকার ১ রান! শেষ বলে ১ রান নিয়ে কাপালি নায়ক!

১৫৭ রানের টার্গেট তাড়া করে শুরুটা ভালো মন্দে মেশানো ছিল কুমিল্লার। প্রথম ওভারে আসে ৮, পরের ওভারে ১৩। দ্বিতীয় ওভারে আল আমিন হোসেনকে তিনটি বাউন্ডারি মেরেছেন ইমরুল। তবে তৃতীয় ওভারে লিটন দাস (৩) বোলার মোহাম্মদ সামির হাতে ধরা পড়েই ফিরে গেছেন।

ইমরুল ও আহমেদ শেহজাদের জুটি খুব দ্রুত ছোটেনি। কিন্তু ওভার প্রতি ৮ রানের টার্গেট পুরণ হচ্ছিল। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে এসেছে ৪৯ রান।  সাবলীল খেলে চলা ইমরুলের পেশিতে টান পড়ে নবম ওভারে। এরপর জোড়া আঘাত হানেন মাহমুদ উল্লা। ২৪ বলে ৩০ রান করে ফিরে যান শেহজাদ। ইমরুলের সাথে তার জুটিটা ৫৪ রানের।

ইমরুল শারীরিক সমস্যায় ছিলেন। এর মধ্যেই প্রসন্নকে লং অনের ওপর দিয়ে পরপর দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে দিলেন। কিন্তু পরের ওভারে মাহমুদ উল্লার বলে সাব্বির রহমানকে ক্যাচ দিয়েছেন। ৩৭ বলে ইমরুল করেছেন ৫৩ রান। এর ৪২ রানই এসেছে বাউন্ডারিতে। ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা তার। এবারের আসরে দেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩১২ রান ইমরুলের। তার বিদায়ের পর ১৬ রান করে ফিরে গেছেন আশার জাইদি। ১১৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপেই পড়ে কুমিল্লা। এরপর মেলা নাটকীয়তার পর কাপালির ব্যাটে কুমিল্লা চ্যাম্পিয়ন!    

এর আগে ওপেনিংয়ে আজও পরিবর্তন আনে বরিশাল। প্রসন্নর সাথে আসা মেহেদি মারুফ ১১ রান করেই ফিরেছেন। ব্যক্তিগত ২০ রানে ফিরে যেতে পারতেন প্রসন্ন। আবু হায়দারকে তুলে মেরেছিলেন। ক্যাচটা হাতে নিয়েও রাখতে পারেননি অলক কাপালি। এর পর নাঈম জুনিয়রকে লং অনের ওপর দিয়ে গ্যালারিতে পাঠিয়েছেন প্রসন্ন। তবে ১৯ বলে ৩৩ করা প্রসন্নকে বোল্ড করে দিয়েছেন স্টিভেন্স।

নবম ওভারে বল হাতে নেন মাশরাফি। একেবারেই ছোটো রান আপে বোলিং। তাতেই পরের ওভারে সাফল্য। বরিশালকে ফাইনালে আনার হিরো সাব্বির তাকে উইকেটে নেমে মারতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড! রান পেতে কষ্টই করতে হচ্ছিল সাব্বিরকে। ১৯ বলে ৯ রান করে ফিরে গেছেন তিনি। ৬৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বরিশাল।

টানা চার ওভার বল করে প্রথম তিন ওভারে ১২ রান দিয়েছেন মাশরাফি। কিন্তু শেষ ওভারে মাহমুদ উল্লা চড়াও হন তার ওপর। মারেন একটি ছক্কা ও দুটি বাউন্ডারি। ১৬ রান দিতে হয় মাশরাফিকে।

কুমিল্লার বোলিংয়ে ছিল নিয়ন্ত্রণ। মাহমুদ উল্লা ও নাফীসকে স্ট্রাইক রোটেট করে খেলতে হয়েছে। স্টিভেন্স ও জাইদিকে দুটি ছক্কা হাঁকানো নাফীস বাজে বলের অপেক্ষায় থেকেছেন। আর দ্রুত রান তোলা যখন শেষের দাবি, তখন ১৭তম ওভারে মাহমুদ উল্লা দুটি বাউন্ডারি মেরেছেন আবু হায়দারকে। পরের ওভারে কুলাসেকারাকে জোড়া বাউন্ডারি মারেন নাফীস।

১৯তম ওভারে আবু হায়দারকে শিকার বানিয়েছেন মাহমুদ উল্লা ও নাফীস। ১৮ রান এসেছে। দুটি বাউন্ডারি মেরেছেন মাহমুদ উল্লা, একটি ছক্কা নাফীসের। প্রথম ১০ ওভারে ৬৭ রান তুলেছিল বরিশাল। পরে গতি বেড়েছে চতুর্থ উইকেটে মাহমুদ উল্লা ও নাফীসের ৫৬ বলে ৮১ রানের জুটিতে। শেষ ৬ ওভারে এসেছে ৬৮ রান। মাহমুদ উল্লা ৩৬ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৮ রান করে শেষ ওভারে আউট হয়েছেন। নাফীস ৩১ বলে ২ বাউন্ডারি ৩ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মাশরাফি, জাইদি, স্টিভেন্স ও কুলাসেকারা।  শেষ হাসিটা কুমিল্লার।